এনজাইম এর কাজ কি?

0

এনজাইমের কাজ কি? এনজাইম কিভাবে কাজ করে?

আরাফাত রহমান Selected answer as best March 17, 2022
0

এনজাইম কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি কয়েক লক্ষ গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। এনজাইমের এই ধর্ম কে প্রভাবন ধর্ম বলা হয়। কীভাবে এনজাইম কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি কে বাড়িয়ে দেয় সে সম্পর্কে জানতে হলে আগে বিক্রিয়ার বাধ শক্তি বা সক্রিয়ন শক্তি সম্পর্কে জানতে হবে। রাসায়নিক বিক্রিয়ার সংঘর্ষ তত্ত্ব মতে কোন রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটাকালে বিক্রিয়ক অণু গুলোর মধ্যে একটি নির্দিষ্ট ন্যূনতম শক্তি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। যেসকল বিক্রিয়ক অণু এই ন্যূনতম শক্তি অর্জন করে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারবে তারাই কেবল রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে। এই ন্যূনতম শক্তিকে বলা হয় বিক্রিয়ার বাধ শক্তি বা সক্রিয়ন শক্তি। একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝাচ্ছি। ধরুন আপনি একটা গাড়িকে ঠেলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে একটা ন্যূনতম শক্তি খরচ করে গাড়িটি কে ঠেলতে হবে। নইলে আপনি গাড়িটিকে সরাতে পারছেন না। সক্রিয়ন শক্তির ব্যাপারটাও অনেকটা এমন। কোন বিক্রিয়ায় বিক্রিয়ক অণু গুলো সক্রিয়ন শক্তি অর্জন করে বিক্রিয়ার মধ্যবর্তী একটি অস্থায়ী  জটিল অবস্থায় পৌঁছে। একেই বিক্রিয়ার ট্রান্সজিশান স্টেট বা মধ্যবর্তী দশা বলা হয়। ট্রান্সজিশান স্টেট এবং বিক্রিয়ার শুরুতে বিক্রিয়ক অণু গুলোর মধ্যে শক্তির পার্থক্যটাই হল ঐ বিক্রিয়ার সক্রিয়ণ শক্তির পরিমাণ।

এখন কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার সক্রিয়ন শক্তি বেশি হলে সে বিক্রিয়ার হার বা গতি কম হবে না বেশি হবে? অবশ্যই কম। যেমন ধরুন আপনার কাছে দুইটা পিকনিক এর প্রস্তাব আসল। দুইটাই একই স্থানে হবে। কিন্তু যেতে হলে আপনাকে একটাতে ৫০০ আরেকটায় ১০০০ টাকা চাঁদা দিতে হবে। আপনার পকেটে বর্তমানে আছে ৩০০ টাকা। আপনি কোনটায় যাবার চিন্তা করবেন ? অবশ্যই যেইটায় ৫০০ টাকা লাগবে সেটায়। শুধু তাই না দেখবেন ৫০০ টাকা চাঁদার অফারটায় লোকের সংখ্যাও বেশি হয়েছে। সক্রিয়ন শক্তির ব্যাপারটাও অনেকটা এমন। যে বিক্রিয়ার সক্রিয়ন শক্তির পরিমাণ যত কম সেই বিক্রিয়ায় তত বেশি অণু সহজেই বাধ শক্তি অর্জন করে বিক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে এবং সেই বিক্রিয়ায়র গতিও বেশি হবে।
এনজাইম যুক্ত বিক্রিয়ার সক্রিয়ন শক্তি এনজাইমহীন বিক্রিয়ার সক্রিয়ন শক্তির থেকে কম।
এখন এনজাইম যা করে সেটা হল এটি কোন বিক্রিয়াকে আগের তুলনায় কম সক্রিয়ন শক্তির পথে ঘটায়।

অর্থাৎ  এনজাইম কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার বাধ শক্তি কমিয়ে দেয়। ফলে এনজাইম ছাড়া রাসায়নিক বিক্রিয়ার তুলনায় এনজাইম যুক্ত বিক্রিয়ায় অধিক বেশি সংখ্যক অণু বাধ শক্তি অর্জন করে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারে। আর তাই বিক্রিয়ায় এনজাইম ব্যবহৃত হলে বিক্রিয়ার গতি বেড়ে যায়। এখন প্রশ্ন হল এনজাইম কীভাবে কোন বিক্রিয়ার সক্রিয়ন শক্তির পরিমাণ কমায় ?

এক এক এনজাইম এক এক প্রক্রিয়ায় কাজটা করে থাকে। কিছু কিছু এনজাইম বিক্রিয়ক গুলো কে একসাথে সঠিক বিন্যাসে রেখে বিক্রিয়ার গতি বাড়ায়। কিছু কিছু এনজাইম তার একটিভ সাইটে সাবস্ট্রেট যুক্ত হবার জন্যে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। যেমন সেটা হতে পারে এসিডিক কিংবা ননপোলার। কিছু কিছু এনজাইম-সাবস্ট্রেট কমপ্লেক্স সাবস্ট্রেট কে এমন ভাবে নমনীয় করে যাতে করে এর মধ্যে রাসায়নিক বন্ধন গুলো সহজেই ভাঙতে পারে এবং এভাবে খুব তাড়াতাড়ি ট্রান্সজিশান স্টেট এ পৌছাতে পারে। কোন কোন এনজাইম বাধ শক্তি কমাবার জন্যে নিজেদের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নেয়। এর জন্যে এনজাইম অণু বিক্রিয়ক অনুর সাথে একটি ক্ষণস্থায়ী সমযোজী বন্ধন তৈরি করে। ক্ষণস্থায়ী শব্দটা গুরুত্বপূর্ণ। সকল এনজাইম ই রাসায়নিক বিক্রিয়া শেষে আবার নিজের আগের অবস্থায় ফিরে যায়। অর্থাৎ বিক্রিয়া শেষ এ এনজাইমের গঠনের দীর্ঘস্থায়ী কোন পরিবর্তন হয় না। একটি বিক্রিয়া প্রভাবিত করার পর বিক্রিয়া শেষ এ এনজাইম প্রোডাক্ট টাকে রিলিজ করে দিয়ে আবার নতুন কোন বিক্রিয়া কে প্রভাবিত করার জন্যে তৈরি হয়।

এনজাইম নিয়ে জানতেঃ ১। এনজাইম বৃত্তান্ত।

২। এনজাইম কি।  

আরাফাত রহমান Selected answer as best March 17, 2022
You are viewing 1 out of 1 answers, click here to view all answers.

কিভাবে যুক্ত হবেন?

নতুন প্রশ্ন করার মাধ্যমে একাউন্ট খুলতে পারবেন। সাইটের উপযোগী প্রশ্ন হলে আপনার একাউন্ট সক্রিয় করা হবে। প্রশ্ন করতে এখানে ক্লিক করুন।