ফ্লাট আর্থ ধারণার যুক্তিগুলো কি?
অনেক উন্নত দেশে ফ্ল্যাট আর্থ সোসাইটি রয়েছে। যদিও তা বিজ্ঞানসম্মত নয় কিন্তু তাদের যুক্তি গুলো কি?
Flat Earth বা সমতল পৃথিবীর ধারণা এসেছে ব্যবিলনীয়দের থেকে। এই ধারণার পেছনে একটা বড় কারণ ছিল খ্রিস্টান ধর্মে এক সময়ে বিশ্বাস করা হতো যে পৃথিবী সমতল। বর্তমানে এই বিশ্বাসকে “সমতল পৃথিবীর পুরাণ” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কিন্তু বর্তমানে ফ্ল্যাট আর্থ সোসাইটি নামে একটি সংগঠন আছে, যার সদস্যরা সমতল পৃথিবীতে বিশ্বাস করে এবং এ বিশ্বাস প্রসারের জন্য কাজ করে। তবে তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য ধর্ম প্রতিষ্ঠা নাকি নিজেদের মতবাদ প্রচার করা সেটা স্পষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়।
এবার আসুন, তাদের যুক্তিগুলো নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করা যাকঃ
- সমতল পৃথিবীতে বিশ্বাসী মানুষদের প্রথম দাবী হলো পৃথিবী যে কমলালেবুর মতো এটা কোনোভাবেই দেখা সম্ভব না। তাই আপাতত ভূমিতে থেকেই যে জিনিস বা প্রমাণগুলা দেখা যায়, সেগুলোর উপর ভিত্তি করেই পৃথিবীর আকৃ্তি নির্ধারণ করতে হবে। তারা বলেন যে আপাত দৃষ্টিতে পুরো পৃথিবীকে সমতলই মনে হয়, কোথাও এর ব্যতিক্রমী জ্যামিতিক গঠন চোখে পড়ে না।
- তারা আসলে অ্যাজিমুথাল ইকুইডিস্টেন্ট প্রজেকশন মানচিত্রকে সঠিক ধরে নিয়ে সমতল পৃথিবীর প্রচারণা চালাচ্ছে।
- স্যামুয়েল রোবোথামের একটি পরীক্ষার উপর তারা অনেক বেশি নির্ভরশীল। তিনি পানির উপর জাহাজের চলনের উপর একটা পরীক্ষা করেছিলেন। তিনি পরীক্ষা শুরু করার আগে ধরে নিয়েছিলেন যে যদি জাহাজ অনেক দূরে চলে যাওয়ার পরে আর দেখা না যায়, তাহলে আমাদের এই পৃথিবী গোলক, আর দেখা গেলে সমতল।
এরপর জাহাজ মাইল খানেক চলে যাওয়ার পরেও তিনি সেটাকে দেখতে পাচ্ছিলেন, যেকারণে তিনি ধরে নেন যে আমরা সমতল গ্রহে বাস করি। কিন্তু, তিনি আসলে ফিজিক্স ভুলে গিয়েছিলেন। - বোকার মতো তারা একটি প্রশ্ন করে যে পৃথিবী যদি সমতল না হয়, তাহলে জাতিসংঘের লোগোতে কেন সমতল পৃথিবীর ছবি?
- তাদের যুক্তি, পৃথিবী গোলক হলে চীনের জিয়াওঝৌ বে-তে প্রায় ৭০০০ ফুট বক্রতার পরিবর্তন হওয়ার কথা ছিল।
এভাবেই তারা আরো অনেক রকম আজগুবি যুক্তি দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে এবং অনেকেই সেটা সহজেই মেনে নিচ্ছে। এর কারণ হলো, সাধারণ মানুষেরা কন্সপিরেন্সি থিওরি সহজেই গ্রহণ করে এবং এটাকে বিশ্বাস করতে পেরে নিজেদেরকে অনেক বেশি ইউনিক মনে করে।
আচ্ছা, বলুন তো, এর উপরে বিজ্ঞান ব্লগে একটা প্রবন্ধ লিখে ফেললে কেমন হয়?