এনজাইম কি?
এনজাইম কিভাবে কাজ করে? এনজাইমের কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন।
এক কথায় বলা যায় এনজাইম হল জৈব প্রভাবক বা উৎসেচক। প্রভাবক বলতে সেসব রাসায়নিক যৌগ কে বোঝাচ্ছি যারা কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি বাড়াতে কিংবা কমাতে পারে। প্রতিটি জীবের বেঁচে থাকা থেকে শুরু করে বংশধর তৈরি এবং মারা যাবার পরে তার মৃত দেহটি প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়া পর্যন্ত সব জায়গায় এনজাইমের ভূমিকা রয়েছে।
খাবার খাওয়া এবং হজম এর কথাই ভাবুন। একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন আমরা যেসব খাবার খাই তার বেশির ভাগই অনেক জটিল, শক্ত ধরনের। আমাদের দাঁত আছে বলে আমরা অনায়েসেই এসব শক্ত শক্ত খাবার গুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলতে পারি। তারপর জিহ্বা দিয়ে তালুর উপর চাপ দিয়ে পাকস্থলীতে পাঠিয়ে দিচ্ছি। তারপর? তারপর কি হয় এসব জটিল জটিল খাদ্য বস্তুর? আমরা তো খাবার খাই আমাদের দেহের কোষ গুলোকে পুষ্টি দেবার জন্যে। কিন্তু আমরা তো সরাসরি পুষ্টি গ্রহণ করছি না। আমরা কতগুলো শক্ত শক্ত খাবারের টুকরো দিচ্ছি। কোষের তো আর আমাদের মতো ধারালো দাঁত নেই যে তারা সেগুলোকে ভেঙ্গে পুষ্টি গুলো আলাদা করবে। আসলে আমাদের পাঠানো শক্ত জটিল খাবার গুলো পরিপাক নামক একটি শারীরবৃত্তিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কতগুলো রাসায়নিক বিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সরল পুষ্টি উপাদানে পরিণত হয়। তারপর কোষ সেগুলোকে শোষণ করতে পারে।
এনজাইমের কিছু বৈশিষ্ট্যঃ
১। এনজাইমের প্রভাবন ক্ষমতা রয়েছে। এনজাইমকে জৈব প্রভাবক বলে কারণ জীবের প্রাণ রাসায়নিক বিক্রিয়া গুলো এনজাইম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
২। রাইবোজাইম বাদে প্রায় সব এনজাইমই কলয়ডাল, উচ্চআণবিক ভরবিশিষ্ট প্রোটিন।
৩। এনজাইম বিক্রিয়ার গতি বাড়ায় কিন্তু বিক্রিয়ায় শেষে নিজে অপরিবর্তিত থাকে।
৪। প্রতিটি এনজাইম এরই অপটিমাম তাপমাত্রা এবং পিএইচ রয়েছে। অপটিমাম অবস্থায় এনজাইম এর কার্যকারিতা ভালো থাকে। অপটিমাম অবস্থার পরিবর্তন হলে এনজাইম এর কার্যকারিতা হ্রাস পায়।
৫। এনজাইম এর কার্যক্রম খুব স্পেসিফিক। একটা নির্দিষ্ট এনজাইম নির্দিষ্ট ধরণের সাবস্ট্রেট এর উপর কাজ করে।
আরও জানুনঃ ১। এনজাইম বৃত্তান্ত।